6/recent/ticker-posts

তিতুমীরকে সঠিক মর্যাদা দানের দাবি জানালেন তাঁর বংশধর ও এলাকাবাসী


#প্রিয়চিত্রসাথী নিউজ💐
*ইনামুল হক*: 
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা লগ্নের অগ্রদূত শহিদ তিতুমীরকে বর্তমান প্রজন্মের কাছ থেকে ভুলিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে কি তিতুমীর সংখ্যালঘু সম্পদায়ের বলে? এই প্রশ্ন তুললেন বাদুড়িয়ার তিতুমীরের ষষ্ট বংশধর সৈয়দ মীর মদত আলিসহ নারকেলবেড়িয়া ও হায়দারপুরের বাসিন্দারা। সোমবার কলকাতায় ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইনোরিটিস কমিশন আয়োজিত আন্তর্জাতিক সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষা দিবসের অনুষ্ঠানের শেষে বাদুড়িয়ার নারকেলবেড়িয়ার শহীদ তিতুমীর মিশনের কর্মকর্তারা একটি স্মারকলিপি তুলে দেন পশ্চিমবঙ্গ মাইনোরিটিস কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরানের কাছে। তিতুমীরের জন্মস্থান বাদুড়িয়ার হায়দারপুর ও শাহাদাত ভূমি নারকেলবেড়িয়ার বাসিন্দাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন তিতুমীরের বংশধর সৈয়দ মীর মদত আলীসহ মিশনের সম্পাদক রবিউল হক,অল বেঙ্গল হোমিওপ্যাথি ডক্টরস ফোরামের চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল মহিত, অল ইন্ডিয়া উর্দু কো-অর্ডিনেশন কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক হায়দার হাসান কাজিমি, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সেবার সম্পাদিকা অনুরাধা চ্যাটার্জী, তথ্যচিত্র পরিচালক রাজকুমার দাস, ভারত বাংলাদেশ পাকিস্তান পিপলস ফোরামের সদস্য রাজকুমার বল এবং নারকেলবেড়িয়া শহীদ তিতুমীর মিশনের সভাপতি সোভান মন্ডল, সদস্য নুরুল আমিন, মোয়াজ্জেম আহমেদ, সাজ্জাদ আলী প্রমুখ।  চিত্রপরিচালক রাজকুমার দাস ২০৭সালে "বীর তিতুমীর"-নামক এক তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছিল যা দেশ বিদেশের বহু ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে তা সমাদৃত হয়।মীর মদত আলি আক্ষেপের সঙ্গে জানান, স্বাধীনতার ৭৬ বছর পরেও তিতুমীরের মতো একজন দেশনায়কের মূল্যায়ন হলো না। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তাঁর বংশধরেরা স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবার হিসেবে দাবি জানিয়ে এলেও তাদের কোন সরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি বা পেনশন চালু করেনি। 
তিতুমীরের জন্মভিটেটুকুও সরকারিভাবে  রক্ষিত হয়নি। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আজ আমাদের পেনশনের দাবি জানাতে হচ্ছে, অভিমানের সুরে একথা বললেন মদত  আলী। একইসঙ্গে জন্মভূমি হায়দারপুর ও শাহাদাত ভূমি নারকেলবেড়িয়া গ্রাম দুটিকে হেরিটেজ ভিলেজ এর মর্যাদা দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। শহীদ তিতুমীর মিশনের সম্পাদক রবিউল হক বলেন, শহীদ তিতুমীরের জীবনের উপর পাঠ্য কোন বিষয় স্কুল স্তরের পাঠ্যপুস্তকে সেভাবে রাখা হয়নি। কোথাও বা বিকৃত ইতিহাস ছাত্র-ছাত্রীদের মনে তিতুমীরের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে দেওয়ার প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে। কলকাতার একটি প্রকাশনী সংস্থার দশম শ্রেণির ইতিহাস বইতে তিতুমীরকে ধর্মোন্মাদ ও সাম্প্রদায়িক নেতা হিসেবে উল্লেখ করা হলে মিশনের তরফে তার প্রতিবাদ জানানো হয়। এরপর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সেই প্রকাশনী সংস্থাকে চিঠি দিয়ে ওই অংশটি বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসাতের চাঁপাডালি বাসস্ট্যান্ডটি তিতুমীরের নামে হলেও তার কোন স্মারক ফলক সেখানে নেই। বদলে গেটে বসেছে বাণিজ্যিক সংস্থার বিজ্ঞাপন। এভাবে তিতুমীরের ইতিহাস ও চিহ্ন মুছে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। আমরা পুরো বিষয়টি মাইনরিটি কমিশনকে জানিয়েছি। সেই সঙ্গে আমাদের দাবি, নারকেলবেড়িয়ায় ঢোকার মুখে তিতুমীরের নামে বড় তোরণ নির্মাণ করতে হবে। তিতুমীরের নামে রাস্তা, নারকেলবেড়িয়া ও হায়দারপুর গ্রাম দুটিকে হেরিটেজ ভিলেজ এর মর্যাদা দিতে হবে। তিতুমীরের বংশধরদের পেনশন চালু করতে হবে। 
তিতুমীরের নামে  কলেজ বা কৃষি গবেষণাগার নির্মাণ করতে হবে। এদিন ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইনোরিটিস কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান স্মারকলিপি গ্রহণ করে এ ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে আলাদাভাবে বসে আলোচনা করার আশ্বাস দেন।



Post a Comment

0 Comments