#প্রিয়চিত্রসাথী নিউজ💐
ক্যান্সার শব্দটাই একসময় আতঙ্ক ছড়াত। বুকের মধ্যে জাঁকিয়ে বসত ভয়। রোগী তো বটেই, রোগীর পরিবারকেও গ্রাস করত উদ্বেগ, আশঙ্কা, টেনশন। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান এখন যে উচ্চতায় পৌঁছেছে তাতে আটকে দেওয়া সম্ভব ক্যানসারকেও। তবে তার জন্য প্রয়োজন সচেতনতা এবং মনের জোর। আর অবশ্যই দরকার অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরিকাঠামো। তাহলে হারানো যায় ক্যান্সারকেও। নিউ আলিপুরের বি.পি. পোদ্দার ক্যান্সার হসপিটালে সোমবারে দেখা গেল এমনই ক্যান্সারজয়ীদের। তাঁরা বোঝালেন, এই রোগটা যতই ভয়াবহ মনে হোক, এরও রয়েছে ‘অ্যানসার।
বেহালা পর্ণশ্রীর স্বপন দেবনাথ যেমন অনেক সিনিয়র সিটিজেনের মতোই প্রস্টেটের সমস্যায় ভুগছিলেন। কিন্তু রোগ পুষে রাখেননি তিনি। সঙ্গে সঙ্গে যান ডাক্তারের কাছে। বিভিন্ন টেস্ট করা হয় জলদি। তাতেই ধরা পড়ে প্রস্টেট ক্যান্সার। তবে তা একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল। দেরি করলে এটাই জটিলতা বাড়াত। কিন্তু গোড়ার দিকে ধরা পড়ায় তা ছড়িয়ে পড়তে পারেননি। বি.পি. পোদ্দার ক্যান্সার হসপিটালে ডাক্তার অম্লান চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে উন্নততম পরিকাঠামোয় প্রায় সাত ঘণ্টার ম্যারাথন অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। তারপর বেশ কিছুদিন চেক-আপের মধ্যে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। কয়েক মাস অন্তর অন্তর ইনজেকশনও চলেছিল। এখন অবশ্য তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। সাহিত্যিক ও আবৃত্তিকার স্বপন বাবু বলেন, ‘ক্যান্সার উচ্চারিত হলেই অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। আর সেখানেই ভুল হয়। মনের জোরের প্রয়োজন সবার আগে। দরকার সচেতনতারও। কারণ, একদম গোড়ায় ধরা পড়লে চিকিৎসা সম্ভব ক্যান্সারের। আর এখন তো চিকিৎসা পরিষেবা অনেক এগিয়ে গিয়েছে। আমি নিজেই যেমন একদম স্বাভাবিক জীবন যাপন করছি। কোনও অসুবিধা নেই। শুধু নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করাতে হয়, এই যা!’ বক্তব্য রাখার পাশাপাশি আবৃত্তিও করেন তিনি। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেন সুনন্দা কুন্ডু, রাজা নস্কর মতো আরও অনেকেই।
বি.পি. পোদ্দার ক্যান্সার হসপিটালের গ্রুপ অ্যাডভাইজার সুপ্রিয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘ক্যানসার মানেই কিন্তু আতঙ্ক নয়, ভয়ও নয়। একে দমন করতে গেলে সবার আগে চাই সচেতনতা। ৩৫-৪০ বছরের পর থেকে তাই সবার নিয়মিত চেক-আপ আবশ্যক। বংশে কারওর ক্যানসার থাকলে প্রতি বছর করান টেস্ট। বংশে কারওর ক্যানসার না থাকলেও একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর নিয়মিত করান টেস্ট। কোনও কারণে ক্যানসারের লক্ষণ ধরা পড়লে যাতে চিকিৎসা করা যায় শুরুতেই। মাথায় রাখবেন যে ক্যান্সারের উন্নততম চিকিৎসা এখন হাতের নাগালেই।’
0 Comments